স্মার্ট মানুষেরা যে কথাগুলো বলেন না

স্মার্ট মানুষেরা যে কথাগুলো বলেন না



কথায় বলে, ‘সে দেখতে-শুনতে ভালো।’ কাউকে দেখলে আমরা তাঁর চেহারা, উচ্চতা, পোশাক-আশাক, সাজসজ্জা তো দেখতেই পাই। এসব মিলিয়ে তিনি হয়তো ‘দেখতে’ ভালো হতে পারেন। কিন্তু ‘স্মার্ট’ হতে গেলে কেবল ভালো দেখালেই চলে না, নিজেকে ভালো ‘শোনাতেও’ হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি অবশ্যই এটা উপলব্ধি করতে পারেন, তাঁর নিজের চেহারা, গায়ের রং বা উচ্চতার মতো বিষয়গুলো পরিবর্তন করার সুযোগ নেই। কিন্তু ‘স্মার্ট’ হয়ে ওঠা আসলে এসবের ওপর নির্ভর করে না। পরিপাটিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা অবশ্যই জরুরি, কিন্তু তার জন্য সামাজিক মাপকাঠিতে ‘সুন্দর’ বা ‘আকর্ষণীয়’ হওয়া জরুরি নয়। আর সবচেয়ে বেশি জরুরি হলো নিজের কথাবার্তা, আচার-আচরণে ‘স্মার্ট’ হয়ে ওঠা। জেনে নেওয়া যাক ‘স্মার্ট’ মানুষেরা কোন কথাগুলো কখনোই বলেন না।

পোশাক–আশাকের চেয়ে জরুরি হলো নিজের কথাবার্তা, আচার-আচরণে ‘স্মার্ট’ হয়ে ওঠা

‘পারব না’ বা ‘আমার পক্ষে সম্ভব নয়’

কারও পক্ষে পৃথিবীর সব কাজে পারদর্শী হয়ে ওঠা সম্ভব নয়। কিন্তু জীবনের প্রয়োজনে কোনো কাজ আপনার সামনে এসে পড়লে ঘাবড়ে যাবেন না, হাল ছেড়ে দেবেন না। বলে বসবেন না যে এ কাজ আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। বরং আপনার না পারা কাজটি কার পক্ষে সমাধা করা সম্ভব, তা ভেবে দেখুন। তাঁর সাহায্য নিন। ‘স্মার্ট’ মানুষেরা এভাবেই সামলে নেন কঠিন পরিস্থিতি।


‘আমি কেমন সামলে নিলাম!’

‘স্মার্ট’ মানুষেরা কখনো নিজেকে ‘স্মার্ট’ দাবি করেন না। নিজেকে জাহির করার মধ্যে আদতে কোনো কৃতিত্ব নেই। আপনার কাজই আপনার হয়ে কথা বলবে। আপনার আলাদাভাবে নিজের গুণগান করার প্রয়োজন নেই।

‘এখানে আমার কোনো ভুল ছিল না’

মানুষমাত্র ভুল হয়। নিজের ভুল হয়ে থাকলে তা স্বীকার করে নেওয়াই ‘স্মার্টনেস’। আবার আপনার যদি ভুল না-ও হয়ে থাকে, তা ‘ঘোষণা’ করতে যাওয়ারও কোনো প্রয়োজন নেই। অন্যের ভুল থাকলে সেটি নিয়েও বাড়াবাড়ি করবেন না। মোটকথা, কোথাও কোনো ভুল হয়ে থাকলে সহজভাবে সেটির সমাধান খোঁজার চেষ্টা করুন। ভুলের ‘রহস্য’ নিয়ে অতিরিক্ত উৎসাহ দেখাবেন না। অন্য কেউ ভুল করে থাকলে তাঁকে আন্তরিকভাবে বুঝিয়ে বলুন, তবে সেটিও অবশ্যই অন্য কারও সামনে নয়।

‘তুমি বড্ড সেকেলে’

সবার মনমানসিকতা এক হবে না, এটাই স্বাভাবিক। কারও মানসিকতা আপনার আধুনিক চিন্তাচেতনার সঙ্গে না মিললে তাঁকে ‘সেকেলে’ আখ্যা দিয়ে দেবেন না। এটা আপনাকেই ‘আনস্মার্ট’ বলে প্রতীয়মান করে তুলবে।

‘আমার সঙ্গী হলে আমি এটা মেনে নিতাম না’

অন্যের জীবনসঙ্গীর কোনো আচরণ আপনার কাছে খারাপ লাগতেই পারে। কিন্তু একই কাজ আপনার জীবনসঙ্গী করলে আপনি তা মেনে নিতেন না, এভাবে কথাটা বলার মধ্যে স্মার্টনেস নেই।

তোমাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে’


আপনি হয়তো কারও প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েই এমন কথা বলছেন। কিন্তু এর অর্থ কিন্তু এমনও দাঁড়াতে পারে, ওই ব্যক্তিকে খুবই খারাপ দেখাচ্ছে। তাই কাউকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে না বলে বরং জিজ্ঞেস করুন, তিনি কেমন আছেন। শারীরিক বা মানসিক কোনো কষ্টেও ভুগতে পারেন তিনি। আপনার সঙ্গে সেই কষ্ট ভাগ করে নিতে চাইলে তিনি নিজের ভালো থাকা বা মন্দ থাকার উত্তর দিতে গিয়ে নিজেই সেই প্রসঙ্গের অবতারণা করবেন। আর যদি তিনি তাঁর খারাপ থাকা প্রসঙ্গে আপনাকে বিস্তারিত বলতে না চান, তাহলে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তা জিজ্ঞেস করতে যাবেন না।

‘বিয়ে করে ফেলো’, ‘বাচ্চা নিয়ে নাও’, ‘অমন চাকরি কেউ ছাড়ে’ বা ‘এত ফুলছ কেন’

‘স্মার্ট’ ব্যক্তি কখনো অন্যকে বিয়ে, সন্তান, পরিবার-পরিকল্পনা, ওজন, ক্যারিয়ার—এসব নিয়ে যেচে পড়ে উপদেশ বা পরামর্শ দেন না। অযাচিত প্রশ্নও করেন না। কারণ, অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে অতিরিক্ত উৎসাহ দেখানোর অর্থ নিজের সত্তাকেই ছোট করা।

‘এ কাজ কেউ ওভাবে করে?’

একই কাজ নানাভাবেই সম্পন্ন করা যেতে পারে। যাঁর যেভাবে সুবিধা বা যেভাবে অভ্যাস, তাঁকে সেভাবেই করতে দিন, যদি না তাতে আপনার কোনো ক্ষতি হয়। যেমন কে কীভাবে নিজের সন্তান বড় করবেন, সে ভাবনা তাঁকেই ভাবতে দেওয়া উচিত। আপনার কাছে কেউ উপদেশ চাইলে অবশ্য আপনার অভিজ্ঞতার আলোকে তাঁকে সুন্দরভাবে উপদেশ দিতে পারেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও এমন উৎকট প্রশ্ন করবেন না।

Sa

Next Post Previous Post